সেনাপ্রধানের বক্তব্যে ভারত-পাকিস্তান থেকে কড়া বার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের চলমান অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের মধ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান জনগণের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। তিনি দেশের স্থিতিশীলতা নিয়ে সতর্ক করেছেন এবং অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষ বন্ধ করতে সকল পক্ষকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে, অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। মঙ্গলবার, সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলোতে গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয়, একইভাবে পাকিস্তানের গণমাধ্যমও তা ব্যাপকভাবে প্রকাশ করে।

জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে পিলখানায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে বলেন, “আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষ বন্ধ করতে হবে। সকল পক্ষকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে, না হলে স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে।” তিনি সতর্ক করেন যে, দেশের জনগণ যদি নিজেদের মধ্যে বিভাজন ভুলে একত্রিত হতে না পারে, তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে।

ভারতীয় গণমাধ্যমে সেনাপ্রধানের বক্তব্য কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অফ ইন্ডিয়া সহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলো সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেছে, যেখানে নির্বাচন এবং অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার প্রসঙ্গও এসেছে। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো সেনাপ্রধানের বক্তব্য কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণভাবে উপস্থাপন করলেও, পাকিস্তানের গণমাধ্যম যেমন ডন এবং এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে দেশীয় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করেছে।

সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে জানান, সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতার জন্য অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা দায়ী। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে অপরাধীরা সুযোগ নিয়ে তাদের কার্যকলাপ চালাচ্ছে, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।” তিনি সকল পক্ষকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এবং বলেন, “একমাত্র ঐক্যবদ্ধভাবেই আমরা সংকটের মোকাবিলা করতে পারব।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের একত্রিত থাকতে হবে, এবং যদি বিভেদ কমাতে না পারি, তবে পরিস্থিতি আরও বাড়বে। আমরা দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করতে চাই, এবং এর জন্য আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে হবে।”

সেনাপ্রধান তার বক্তব্যের শেষে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন এবং বলেন, “আমার একমাত্র আকাঙ্ক্ষা হলো দেশ ও জাতিকে একটি সুন্দর অবস্থানে রেখে সেনানিবাসে ফিরে যাওয়া।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “মতবিরোধ থাকলেও, সবাইকে এক হয়ে দেশের মঙ্গলার্থে কাজ করতে হবে।”

এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং চীন, এসব দেশ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত নজর রাখছে।