পাকিস্তানের আয়োজনে হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আর তিন সপ্তাহও বাকি নেই। এখনো পাকিস্তানের তিন ভেন্যু কতটা প্রস্তুত এ নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক। পাকিস্তানের ভেন্যুগুলো প্রস্তুত না হলে পুরো টুর্নামেন্টই শেষ মুহূর্তে দুবাইয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে কি না, এ নিয়েও জল্পনা-কল্পনা চলছে।
এর মধ্যেই হঠাৎ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিওফ অ্যালারডাইস। ২০২০ সালে প্রথমে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব নিয়ে শুরুর পর আইসিসির সিইও হিসেবে তিনি পূর্ণকালীন দায়িত্বে নির্বাচিত হন ২০২১ সালের নভেম্বরে। চার বছরের দায়িত্বের শেষ টানার ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজছেন তিনি।
অ্যালারডাইসের পদত্যাগের ঘোষণায়ও অবশ্য ধোঁয়াশা আছে। ঘোষণাটি এখনই কার্যকর হবে নাকি তিনি ফেব্রুয়ারি-মার্চে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর সরবেন তা এখনো নিশ্চিত নয়। আইসিসি অবশ্য জানিয়েছে, তারা পরবর্তী সিইও খোঁজার কাজ শুরু করে দিয়েছে।
অ্যালারডাইসের পদত্যাগের ঘোষণা এমন সময়ে এল, যখন গত কয়েক মাসে আইসিসির শীর্ষ পর্যায়ে অনেক অদলবদল আসছে। গত ১ ডিসেম্বর আইসিসির চেয়ারম্যানের পদে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সাবেক সচিব জয় শাহ। গত এক বছরের মধ্যে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল, হেড অব ইভেন্টস ক্রিস টেটলি এবং বিপণন ও যোগাযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ক্লেয়ার ফারলং পদত্যাগ করেছেন।
আইসিসি সিইওর ভূমিকায় তাঁর পূর্বসূরি হারুন লরগাত বা ম্যালকম স্পিডদের মতো সংবাদমাধ্যমে অতটা আলোচনায় না এলেও অ্যালারডাইসের সাফল্য কম নয়। ভারতের প্রাথমিক আপত্তি সত্ত্বেও ডিআরএসকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত করা, ক্রিকেটকে অলিম্পিকের অংশ বানানো, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও অধুনা-বিলুপ্ত ওয়ানডে সুপার লিগ শুরুর সিদ্ধান্ত কার্যকরের সবকিছু দেখভাল করেছেন তিনি। করোনাকালীন সময়ও সামলাতে হয়েছে তাঁকে।
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনও তাঁর সাফল্য হিসেবে দেখা যেত, কিন্তু সেই টুর্নামেন্টের আয়োজন ঘিরে নানা প্রশ্ন তাঁকে বিতর্কের মুখে ফেলেছে। এ নিয়ে আইসিসির বোর্ড সদস্যরা অসন্তুষ্টি জানিয়েছেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর সত্যি মানলে যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর পাকিস্তানে হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজন ঘিরে বিতর্কই অ্যালারডাইসের সরে যেতে হওয়ার কারণ। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, তাদের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র-ওয়েস্ট ইন্ডিজে গত বছরে হয়ে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তহবিল বন্টন এবং এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজন ঘিরে নাটক ও বিতর্কের কারণে বোর্ডের দিক থেকে চাপে ছিলেন অ্যালারডাইস। পাকিস্তানের দুটি ভেন্যু রাওয়ালপিন্ডি ও করাচি যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য এখনো প্রস্তত নয়, সেটিও আইসিসির বোর্ডকে জানাননি অ্যালারডাইস – এমনটাই জানাচ্ছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।