শব্দটি ঘিরে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে সাধারণ মানুষের-এমনটি মনে করছেন কমিশনসংশ্লিষ্টরা। তারা আরও জানান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর সুপারিশ করবে। ইতোমধ্যে চাকরিপ্রত্যাশীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য ৩২ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির জন্য গঠিত কমিটি অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধির সুপারিশ করতে পারেনি। কারণ কমিটির কার্যপরিধিতে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধির সুপারিশ করার কোনো এখতিয়ার ছিল না। সে কারণে কমিশন সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা যৌক্তিকভাবে বাড়ানোর সুপারিশ করবে। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত থাকায় পদোন্নতিসংক্রান্ত বিষয়ে কমিশন নতুন করে কোনো সুপারিশ নাও করতে পারে।
কমিশন জেলা প্রশাসকের (ডিসি) পদবি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট করার সুপারিশ করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এছাড়া সরকারি অফিসে কর্মরতদের স্যারের পরিবর্তে জনাব এবং নারী কর্মকর্তাদের ম্যাডাম বা পদবি মোতাবেক সম্বোধনের সুপারিশ থাকতে পারে। উল্লেখ্য, সরকারি অফিসে স্যার বলা নিয়ে প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন স্থানে সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেবাপ্রত্যাশী ও গণমাধ্যমকর্মীদের দ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটছে। সেক্ষেত্রে কমিশন স্যারের পরিবর্তে উল্লিখিত পদবি বা নাম ধরে সম্বোধনের সুপারিশও করতে পারে।
আরও জানা গেছে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩০টি মতবিনিময় সভা, সেমিনার ও ওয়ার্কশপ করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের বক্তব্য নিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা, ক্যাডার সংগঠন এবং সেবাপ্রত্যাশী মানুষের বক্তব্য শুনেছে কমিশন। সেক্ষেত্রে কমিশনের কাছে সাধারণ সেবাপ্রত্যাশীরা সেবা সংস্থায় কর্মরতদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছে। বিশেষ করে ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিস, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, পাসপোর্ট অফিস, জন্ম ও মৃত্যু সনদ, ট্রেড লাইসেন্স এবং সামাজিক নিরাপত্তা সেবা নিতে গিয়ে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে।
কমিশন সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় কর্মরতদের জবাবদিহির আওতায় আনার সুপারিশ করতে পারে। এছাড়া আগের আবেদন নিষ্পত্তি ছাড়া পরের আবেদনের বিষয়ে কোনো কার্যক্রম নয় এমন পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। ফলে বিশেষ সুবিধা নেওয়া বা প্রভাব খাটিয়ে দ্রুত কোনো কাজ করিয়ে নেওয়ার রাস্তা বন্ধ হবে বলে মনে করছে কমিশনসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এতে তদবিরের সংস্কৃতি ধীরে ধীরে কমে আসবে। এছাড়া সিভিল সার্ভিস নিয়ে গবেষণা সেল করার সুপারিশ করতে পারে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। দেশে সিভিল সার্ভিসের কার্যক্রম গতিপ্রকৃতি গবেষণায় কোনো প্রতিষ্ঠান এখনো গড়ে ওঠেনি।